নিজস্ব প্রতিনিধি: মা স্বপ্ন দিয়েছিলেন দির্ঘাঙ্গী পরিবারের রঘুনন্দন মহারাজকে। তিনি ছিলেন হবিবপুরের জমিদার। তিনি মায়ের স্বপ্নমতো জমিদার বাড়ির কাছেই কালীপুকুর থেকে মায়ের মূর্তি এবং ঘট উদ্ধার করেন। তিনি নিজে বৈষ্ণব হলেও মায়ের পুজোতে তাঁর কোনও কুণ্ঠা ছিল না। এসব প্রায় শ’পাঁচেক বছর আগের কথা।
সেইসময় মা পূজিত হতেন এক পর্ণকুটিরে। মায়ের মন্দিরটি ছিল একবারে গভীর জঙ্গলে। জঙ্গলে ছিল ভয়ংকর সব ডাকাত আর বন্যজন্তুর বাস। তাই ভক্তেরা সব দলবেঁধে আসতেন মায়ের পুজো দিতে। এখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনে থাকায় বহু তান্ত্রিক সিদ্ধিলাভ করেন সাধনায়। তাই এখানকার প্রসিদ্ধি আছে কালিকাপীঠ হিসেবে। এখনও সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের পুজো হয় তন্ত্রমতে। মায়ের সামনে দু’টি ঘটে নিত্যপুজো হয়। একটি মা সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের, অন্যটি শীতলা মায়ের।
জানা যায়, মা সিদ্ধেশ্বরী কালী ভীষণই জাগ্রত। ভক্তের মনোবাঞ্ছা শুধু পূরণই করেন না, ভক্তকে বিপদের আশঙ্কা বা বিপদ থেকে বাঁচান। এমন বহু কিংবদন্তি ছড়িয়ে আছে। স্থানীয় মানুষজনদের কাছে শোনা যায়। ভিন্ন ধর্মের মানুষও মায়ের কৃপা পেয়েছেন। তাঁদের পরিবারের লোককে কঠিন রোগ থেকে মুক্ত করেছেন মা। যাঁরা ভক্তিভরে মাকে স্মরণ করেন এবং ডাকেন তাঁদের কেউই সিদ্ধেশ্বরী মায়ের কৃপাদৃষ্টি বঞ্চিত হন না। প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের মন্দিরে।
মায়ের মন্দির খোলে সকাল সাড়ে সাতটা। সাড়ে বারোটায় ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। তখন বন্ধ হয় মন্দিরের দরজা। বিকেল পাঁচটায় মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয় ভক্তদের জন্য। তারপর সন্ধেবেলা সাড়ে সাতটায় সন্ধ্যারতির পর বন্ধ হয় মন্দিরের দরজা। মাকে নিত্য নিবেদন করা হয় সিদ্ধচালের অন্নভোগ। সঙ্গে তরিতরকারি, মাছ। রাতে শীতলভোগ। প্রতি অমাবস্যায় থাকে খিচুড়িভোগ, মাছ ইত্যাদি। দীপান্বিতা কালীপুজোয় খিচুড়িভোগ, চালবাটার বড়া, মাছ, মিষ্টি ইত্যাদি। নিত্য অন্নভোগ নিবেদন করা হয় ভগবান বিষ্ণু এবং মা শীতলাকে। ষোড়শোপচারে সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের পুজো হয়। রটন্তী কালীপুজোয় চালবাটার বড়া, নতুনগুড়ের পায়েস অবশ্যই দিতে হবে। বিশ্বকর্মা পুজোর দিনও বিশাল ভিড় মন্দির প্রাঙ্গণে।
ছবি: গুগুল
আরও পড়ুন: তিনমাস পর নিউজিল্যান্ডে করোনায় প্রথম মৃত্যু
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.